শনিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

শ্রীময়ী, তোমাকে... [১৪]

প্রিয়তম শ্রীময়ী,

তোমাকে শেষ লিখেছিলাম অনেকদিন হয়ে গেলো। কেমন আছো তুমি? আমি বিষাদাচ্ছন্ন হয়ে থাকি আজও...

কাল বসন্তের প্রথম সূর্য উঠেছিলো এই নগরে। নিজের বাসন্তী রঙে সাজিয়ে দিয়েছিলো এই নাগরিক জঙ্গলটাকে। তুমিও বাসন্তী সেজেছিলে। শুধু, আলফেসানীটা সারাদিন নিজের ঘরের কোনায় মুখ গুজে পড়েছিলো। অবাস্তব জানালায় চোখ রেখে খুঁজে ফিরেছিলো বাস্তব উৎসবের ছোঁয়া...

জানো? মাঝে মাঝে মনেহয়, অন্য কোনো সময়ে; অন্য কোনো বাস্তবতায় তোমার সাথে যদি দেখা হ'তো, তাহলে কেমন হ'তো আমাদের পথটা? আবার মনেহয়, এই ই ভালো...

এই দ্বিধা-মেঘ-স্মৃতি-রোদ... এই না পাবার ব্যাথা কিংবা না পেয়েই হারাবার ভয়, এই ই আমার ভবিতব্য...

তোমার হাসিমাখা মুখে যেই রোদ ঝলমলিয়ে ওঠে, তার জন্য পথে পথে মুখ থুবড়ে পড়েও ছুটে আসি। কখনও হাসির বদলে একঝাঁক ধারালো ছুরি জমে হৃদপিন্ডের নিলয়ে-অলিন্দে। ভালোবাসি। তাই ঘরে ফেরার পথেই ছুরিগুলো এক এক করে বের করে আনি, ছুঁড়ে ফেলে দিই অচেনা অন্ধকারে...

আমার কষ্টে তুমিও আঘাত পাও চাইনা কখনই। তবুও, অজান্তেই, হয়তো কখনো আহত করে ফেলি তোমায়। জানো নিশ্চয়, তাতে আমারই ক্ষত বেড়ে চলে অহর্নিশ। ক্ষমা চাইনা, তোমার স্মৃতিতে কষ্ট জমা হবে, তাই...

আজ, খুব ভেবেছিলাম তোমার সাথে কথা বলবো রাতভর। তুমি ডুব দিলে। হয়তো স্মৃতিসমুদ্দুর ডেকেছিলো খুব হাতছানি দিয়ে। হয়তো ক্লান্ত ছিলে সারাদিন পরিশ্রম শেষে। আমিও চাইনি তোমার জেগে ওঠা ক্ষততে চুমু দিতে। জানি হিতে বিপরীত হতো, তাই। আমার নিয়তিই যে এমন...

পৃথিবীর কঠিনতম কাজটা হচ্ছে অতীত ভুলে থাকা, শ্রীময়ী। অস্বীকার করবোনা, কষ্ট পাই অনেক। তবু তুমি ভালো থাকবে জেনে, হৃদয়ের ক্ষতগুলো আশার রঙীন সুঁই-সুতোয় মেরামত করতে বসি...

দু'বাহু ছড়িয়ে রেখেছি শ্রীময়ী, তুমি এলেই জড়িয়ে নেবো ভালোবাসার বৃষ্টিতে...

ইতি,
তোমারই আমি...