খাতা
খুলে লিখে রাখি দাগ, বিফল সন্ধ্যার আঁধার, বিপর্যস্ত বিকেল আর দুপুরের
মেঘদল। রিকশার টুনটুন শব্দে বৃষ্টি নেমে আসে মসৃণ হাতিরঝিলে। রাস্তা ও
এলোমেলো ব্রীজের রেলিংয়ে। প্রিজম কেটে বেরিয়ে আসা রঙধনু দেখে যুবকেরও শখ হয়
মাতাল হবার। পায়ে পায়ে হেঁটে যায় শুঁড়িখানার পথ ধরে, সোডিয়াম সোনালী আলোয় দেখে রঙ মাখা নাগরিক সেলিব্রিটি।
সেই বিকেলগুলো কেনো জানি রয়েই যায়। ঘরের কোনে জমে থাকা ধুলোয়, সেলাই খুলে যাওয়া জুতোর আরামে। সময়! আহা সময়!! কে বলে তুমি অনবদ্য চিকিৎসক? তোমার হেরে যাওয়া দেখতে দেখতে মাতাল যুবকের চোখের কোনে অশ্রু জমে। ধোঁয়ায় মাখিয়ে উড়িয়ে দিই বিবর্ণ সময়ের গল্প।
পথে পথে সরোদের সুর। ব্যস্ততম সকালের রোদ নিমেষে বদলে যায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে। ছাতা হাতে কাউকে দেখে যুবকের হৃদয় কাঁপে। মিলিয়ে ফেলে ওড়না ও জামার রঙের বিভ্রমে। ইচ্ছে করে নেমে যাই, কথা বলি, হেঁটে চলি পাশাপাশি। ব্যস্ততার ডামাডোলে হারিয়ে যায় সরোদের সুর। বুকপকেটে কিংবা ব্যাকপকেটে জমা হতে থাকে বিষাদের ধুসর পাখি।
পার্কে বসে থাকা যুবকের চোখ পড়ে থাকে লাল ইটের ব্র্যাকেটে চলে যাওয়া আঁকাবাঁকা কংক্রিটের পথে। চা'এর কাপে চুমুক গুলো পথ ভুলে যায়, শীতল থেকে শীতলতর হয়ে যায় কাপ ছেড়ে উড়ে যাওয়া ধোঁয়ারা। কংক্রিট পথে হেঁটে যাওয়া পা দেখতে দেখতে ছায়াছবির চরিত্র জীবন্ত হয়। ভুলে যাই কিংবা মনে করি সেলুলয়েডের ছবি।
দু'টো স্বপ্নের মধ্যে যেই দূরত্ব, তাকে ভুলে থাকা হয়না যুবকের। একের পর এক স্বপ্নগুলোর দূরত্ব বাড়ে। যুবক ডুবে যায় সোনালী পাখির গান আর সবুজ ফুলের ধোঁয়ায়। দেয়ালে দেয়ালে ছায়াদের আনাগোনা বাড়ে। মানুষগুলো ঝাপসা হতে থাকে দিনের পর দিন। ভুলে যেতে থাকি সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, রাত আর ভোরের পার্থক্য...