সোমবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০১৩

হাতুড়ে গদ্য (সাদা-কালো-লাল-নীল)

ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০১০ - ২:৪২ অপরাহ্ন 

লাল
টেলিফোনটা
বেজে উঠল। লাল টেলিফোন। সবে লাল রঙ জমে উঠছিল চোখের তারায়, এর ভেতরেই লাল
টেলিফোনটা বেজে উঠে সব ভজঘট বাধিয়ে দিলো।
অভিজাত
লেকটার পাড়ে অস্তরাগের সব লাল শরীরে মেখে পড়ে আছে একটা কিশোরী। তার পরিধেয় জুড়ে
ফুটে রয়েছে একঝাঁক লাল ফুল। গলা ঘিরে লাল লাল দাগ দেখা যাচ্ছে। অবিশ্বাস্য ভাবে
তার ঠোঁট দু’টো একেবাররেই অক্ষত আছে, সেখানে জ্বল জ্বল করছে টুকটুকে লাল লিপস্টিক।
আকাশের
লাল রঙ অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছে। ইষৎ লাল আকাশের নীচে গাঢ় লাল টেইল লাইট
জ্বেলে শাঁ শাঁ করে ছুতে যাচ্ছে একাধিক গাড়ি।

সাদা
সকালটা শুরু হয়েছিলো ধবধবে সাদা মন নিয়ে। মনের রঙের সাথে জামার রঙটাও
মিলে গিয়েছিলো জুঁই নামের কিশোরীর। প্রতিদিনকার মতই সে হেঁটে গিয়েছিলো বহুচর্চিত
পথ ধরে। শুভ্র সকালের আনন্দে সে ভুলে গিয়েছিলো গত বিকেলের স্মৃতি।
দুপুর হয় হয়, ঝকঝকে রোদে বড় বড় বাড়িগুলো থেকে বিচ্ছুরিত হচ্ছিলো
অলৌকিক সাদা আলো। সব শুভ্রতাকে নিজের সাথে নিয়ে জুঁই পথ চলছিলো। একটা ধবধবে সাদা
গাড়ি হঠাৎই এসে থেমেছিলো তার পাশে। সেই সাদা গাড়ি থেকে কয়েকজন নেমে এসেছিলো
দুপুরের অলৌকিক শুভ্র আলোতে।

নীল
আকাশে একটুও মেঘ নেই। জানালা দিয়ে একটুকরো নীল আকাশ দেখা যাচ্ছে। যে
ঘরে সে আছে, সেই ঘরের দেয়াল, আসবাব সবই নীল। নীল ঘরের এক কোনায় আতংকে নীল হয়ে বসে
আছে মেয়েটা।
নীলচে লাইটের আলোতে তিনটে নীল শরীর দেখা যাচ্ছে বসে আছে নীচু একটা
টেবিলকে ঘিরে। নীল বেডকভার ঢাকা বিছানাতে একজন শুয়ে আছে। যার হাতের সিগারেট থেকে
নীলচে ধোঁয়া পাক খেতে খেতে উড়ে যাচ্ছে নীল সিলিং এর দিকে। দু’জন উঠে দাঁড়াল।
মেয়েটা নীলতর হয়ে উঠলো। আতংকের সাথে যোগ হয়েছে বেদনার নীল।

কালো
ছেলেটার মনে ছিলো মহাবিশ্বের অন্ধকার। যখন যেদিকে সে দৃষ্টি দিয়েছে,
সেদিকেই ছড়িয়ে গিয়েছে কালো রঙ। মেয়েটাকে সে উপহার দিতে চেয়েছিল কালো র‌্যাপিং মোড়া
অন্ধকার। কালো উপহারের প্রত্যাখ্যান তার ভেতরের কালোর উপর আরো কয়েক পোঁচ কালির পরত
ছড়িয়ে দিয়েছিলো।
মনের অন্ধকার কোণে জেগে উঠেছিলো কালো দানবেরা।

সাদা-কালো-লাল-নীল

গাঢ় আঁধারে ডুবে যাওয়া জুঁইগুলো
সকল সুগন্ধ অতিক্রম করে ঝরে পরে
এলোমেলো হয় জোছনাবিলাসী একদল যুবকের পদক্ষেপ
বিভ্রান্ত নীলাভ ছড়িয়ে পড়ে বিরাজমান সন্ধ্যার লালে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন