এপ্রিল ৩, ২০১১ - ১১:৩৯ অপরাহ্ন
*
আমি এখন আর কারো কাছে থেকে চিঠি পাই না। সেই অর্থে কারো চিঠির জন্য যে
উদগ্র প্রতীক্ষা, সেরকম কেউ আসলে কোনদিনই ছিলোনা। পাতাবাহারের সবুজে ছড়ানো
ছিটোনো বিবিধ রঙের মত আনন্দ নিয়ে আসা বর্নিল চিঠি বন্ধ হ'য়ে গিয়েছে এক যুগ
আগেই। তবু, বৃষ্টি যখনই নামে; হোক সে মাঝ দুপুরে, হোক ভোর সকালে কিংবা নিওন
সন্ধ্যায় নাহয় নিশুতি রাতে। আমার খালি মনে হয় একজন পোস্টম্যান, তার বুড়োটে
সাইকেলে চেপে ভিজতে ভিজতে আমার জন্য একটা চিঠি বয়ে আনছে। সারাটা
বৃষ্টিক্ষণ আমি অপেক্ষায় থাকি কলবেল বেজে ওঠার...
**
রোদ ঝলমল দুপুরের একটা উদাসী মাদকতা আছে। তার সাথে যদি যোগ দেয় মফস্বলের
একাকী রাস্তা আর রাস্তায় এলোমেলো ছড়ানো ছায়ারা... সেই দুপুরের উদাসী
মাদকতায় আমি মরতে পারি।
এমনই এক দুপুরে, সাইকেলে টুনটুন ঘণ্টি বাজিয়ে খাকি জামার পোস্টম্যান একটা চিঠি এনেছিলো আমার জন্য।
***
রাত জাগা আমার হয়ে ওঠেনি তেমন। আঙ্গুল গোনা যে কয়টা রাত জেগেছি, মনের
পর্দা সরিয়ে আসল নিজেকে খুঁজে বেড়াতেই কেটে গিয়েছে। চিঠির লাইনে লাইনে
বসিয়ে দিয়েছি আমার আমিকে। আসলে রাতের আঁধার সবকিছু ঢেকে দিয়ে নিজেকে সমর্পন
করে নিজের কাছেই। ভোরের আলোয় সেই চিঠি গুলোকে বড় বেশি নগ্ন লাগে। আমার আর
চিঠি পোস্ট করা হয়ে ওঠে না। উঠোনে ছড়ানো শিউলি ফুলের মত, চিঠির টুকরো গুলো
ঠাঁই নেয় জানালা আর দেয়ালের সীমান্তে।
****
আমার আর চিঠি লেখা হয়না। পোস্ট অফিসের পেট-মোটা লাল পোস্টবক্স গুলো বুড়ো
হ'তে হ'তে একসময় তাদের পায়ের কাছে থাকা মাটিকে বন্ধুত্বের আলিঙ্গনে জড়ায়।
আমার চিঠি পোস্ট করা হয়না।
*****
দূরে কোথাও কেউ হয়তো আমার মতই অপেক্ষা করে থাকে চিঠির...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন