মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৩

মুক্তগদ্যঃ বর্ষানগর

এপ্রিল ২০, ২০১২ - ১:১২ পূর্বাহ্ন

*
বর্ষানগরের কৃষ্ণচুড়ারা একে একে ফুটে চলেছে।
**
দুপুরের ঝলমলে রোদ ভেঙ্গে ছুটে যাওয়া রিকশার টুনটুন শুনে বুকের ভেতর চাপচাপ ব্যাথা জমা হতে থাকে। এমনই টুনটুন রিকশা ছুটে গিয়েছিলো যেদিন তুমি চলে গিয়েছিলে শহর থেকে। আমার নিজস্ব নগর থেকে। ভাঙা চুড়ির মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো শব্দগুলো এসফল্টের রাস্তা জুড়ে।
***
দূর আকাশের কোনে, একপাল কাফ্রী মেঘের মিটিং জমায়েত ছিলো সেদিন। তাই বুঝি বিদ্যুতের চাবুক হাতে নেমেছিলো সোনালী সন্ধ্যা। নিঃশব্দ চাবুক চমকাচ্ছিলো সুর্যকে ঘিরতে উদ্যত মেঘেদের পিঠে। নির্যাতনে অভ্যস্ত কাফ্রী মেঘেরা আনন্দে খলখল হেসে উঠছিলো থেকে থেকেই। আর বেড়ে চলছিলো সংখ্যায়।
****
শোঁশোঁ করে কাফ্রী মেঘদলের বন্ধু, বাউল বাতাস ছুটে এসেছিলো তখন। গাছের পাতায় কাঁপন তুলে উপস্থিতি জানান দিচ্ছিলো তারা। মেঘদলের সাথে সংগত তুলছিলো রাস্তায় নানা শব্দের ওড়াওড়ি। বাউল বাতাসের বাঁশি শুনে চারদিক থেকেই দলে দলে ছুটে আসছিলো কাফ্রী মেঘের ঝাঁক। সুর্যের বিদায় নেবার আগেই তাকে ঘিরে ফেলেছিলো। স্বৈরাচারী সুর্যের দাপট কমিয়ে দিয়েছিলো এক লহমায়। শুধু সুর্যের বরকন্দাজেরা রয়ে গিয়েছিলো চাবুকের বিদ্যুৎ হাতে নিয়েই।
*****
চাবুকের আঘাত বেড়েই চলছিলো সময়ের সাথে সাথে। মেঘেদেরও ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে পড়ছিলো একটু একটু করে। তাই তারা মৃদু লয়ের গান শুরু করেছিলো বৃষ্টিছন্দের আড়ালে। বিদ্যুতের শপাং শপাং চাবুকের সাথে সাথে বাতাসের বাঁশি বেজেই চলেছিলো, আর জোর গলায় নামছিলো মেঘেদের উত্তাল গান।
******
কৃষ্ণচুড়ারা কাফ্রী মেঘদলের গান শুনে বদলে নিয়েছিলো নিজেদের চরিত্র। আর ঝুম বৃষ্টি নেমেছিলো সেদিন। এই বর্ষানগরের রোদজ্বলা পথ গুলো নিমেষেই হয়ে উঠেছিলো থই থই নদী...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন