এপ্রিল ১৭, ২০১০ - ৮:২৫ অপরাহ্ন
শিশুরা নির্যাতিত হয়। কাগজে বড় বড় অক্ষরে খবর ছাপা হয়। আমি অসীম নির্লিপ্তির সাথে এড়িয়ে যাই। মানুষেরা অমানুষের মত আচরণ করে, আমি নির্লিপ্ত হাতের ইশারায় জানালার পর্দা টেনে দেই। মানুষের দুঃখ-কষ্টগুলো আমাকে আর স্পর্শ করতে পারে না। কেমন যেনো একটা কুয়াশা ঢাকা চোখে তাকিয়ে থাকি। চোখের দরজা পার করে ঘটনাগুলো মনের ঘরে পৌছুতে পারে না।
আমি কি কোন রকমের মানসিক ডিসএ্যাবিলিটিতে ভুগছি? অনেকদিন ধরেই ভেবে চলেছি...
উত্তরের আশায় নিজের স্মৃতির দিকে একটু নজর দেই...
ঘটনা-১:-
‘৮৭/৮৮ সালের কথা, হাফপ্যান্ট পড়ে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে যাই। খুলনার বেশিরভাগ রাস্তার পাশে দিয়েই ২/২.৫ ফুট চওড়া ড্রেন। ওই ড্রেনগুলো লাফিয়ে পার হওয়া আমাদের বয়েসীদের কাছে ছিলো বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ খেলা। যাহোক, স্কুলে যাবার পথেও এমন ড্রেনের পাশ দিয়ে যেতে হত। একেবারে স্কুলের কাছে গিয়ে ড্রেনের পানিতে কচুরীপানা জমে থাকত। মাঝে মাঝে কচুরীপানার ফুল দেখে আনন্দে মনটা ভরে উঠত। কখনো সেই ফুল তুলে স্কুলে নিয়ে যেতাম, কখনো বাসায় নিয়ে আসতাম। একদিন স্কুলে যাবার পথে সবুজ কচুরীপানার ভিতরে হালকা বেগুনী আর হলুদের মিশেল দেয়া ফুল তুলতে এগিয়ে গিয়ে বেশ ধাক্কা খেলাম। সবুজ আর বেগুনীর ব্যাকগ্রাউন্ডে হালকা গোলাপী একটা পুতুলের মত শরীর আধা-ডোবা হয়ে আছে। প্রথমে ভেবেছিলাম আসলেই বুঝি পুতুল। পরে ড্রেনের পাশে পড়ে থাকা গাছের ডাল দিয়ে খোঁচা দিয়ে দেখি শরীরটা ফুটো হয়ে ডাল ঢুকে যায়। আমার আর কচুরীপানার ফুল তোলা হয়না। স্কুল থেকে ফিরে আসার পথে ওই শিশুর শরীরটা দেখিনি। বাসায় এসে অনেককেই জিজ্ঞাসা করায় মোটামুটি যে ধারণা পেলাম, ঐ বয়সের জন্য সেটা খানিকটা ভয়াবহ। শুনেছিলাম ঐ খানে নতুন একটা মা ও শিশু ক্লিনিক হয়েছে। মৃত বাচ্চাগুলোকে ওই ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়। এই ব্যাপারটা মাসে দুই-তিনবার দেখতাম। প্রথম দিকে যেমন উত্তেজনা হত, পরে সেটা মিইয়ে গিয়েছিল। এখনও কচুরীপানার ফুল আমি ভালোবাসি। কিন্তু তুলতে যেতে পারি না।
অনেক বড় হয়ে ওঠবার পর জেনেছিলাম, আসলে স্বাভাবিক ভাবে মৃত নবজাতকদের না, ওই ড্রেনটা ছিল এ্যাবর্শন করা শিশুদের ডাম্পিং ড্রেন।
শিশুরা নির্যাতিত হয়। কাগজে বড় বড় অক্ষরে খবর ছাপা হয়। আমি অসীম নির্লিপ্তির সাথে এড়িয়ে যাই। মানুষেরা অমানুষের মত আচরণ করে, আমি নির্লিপ্ত হাতের ইশারায় জানালার পর্দা টেনে দেই। মানুষের দুঃখ-কষ্টগুলো আমাকে আর স্পর্শ করতে পারে না। কেমন যেনো একটা কুয়াশা ঢাকা চোখে তাকিয়ে থাকি। চোখের দরজা পার করে ঘটনাগুলো মনের ঘরে পৌছুতে পারে না।
আমি কি কোন রকমের মানসিক ডিসএ্যাবিলিটিতে ভুগছি? অনেকদিন ধরেই ভেবে চলেছি...
উত্তরের আশায় নিজের স্মৃতির দিকে একটু নজর দেই...
ঘটনা-১:-
‘৮৭/৮৮ সালের কথা, হাফপ্যান্ট পড়ে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে যাই। খুলনার বেশিরভাগ রাস্তার পাশে দিয়েই ২/২.৫ ফুট চওড়া ড্রেন। ওই ড্রেনগুলো লাফিয়ে পার হওয়া আমাদের বয়েসীদের কাছে ছিলো বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ খেলা। যাহোক, স্কুলে যাবার পথেও এমন ড্রেনের পাশ দিয়ে যেতে হত। একেবারে স্কুলের কাছে গিয়ে ড্রেনের পানিতে কচুরীপানা জমে থাকত। মাঝে মাঝে কচুরীপানার ফুল দেখে আনন্দে মনটা ভরে উঠত। কখনো সেই ফুল তুলে স্কুলে নিয়ে যেতাম, কখনো বাসায় নিয়ে আসতাম। একদিন স্কুলে যাবার পথে সবুজ কচুরীপানার ভিতরে হালকা বেগুনী আর হলুদের মিশেল দেয়া ফুল তুলতে এগিয়ে গিয়ে বেশ ধাক্কা খেলাম। সবুজ আর বেগুনীর ব্যাকগ্রাউন্ডে হালকা গোলাপী একটা পুতুলের মত শরীর আধা-ডোবা হয়ে আছে। প্রথমে ভেবেছিলাম আসলেই বুঝি পুতুল। পরে ড্রেনের পাশে পড়ে থাকা গাছের ডাল দিয়ে খোঁচা দিয়ে দেখি শরীরটা ফুটো হয়ে ডাল ঢুকে যায়। আমার আর কচুরীপানার ফুল তোলা হয়না। স্কুল থেকে ফিরে আসার পথে ওই শিশুর শরীরটা দেখিনি। বাসায় এসে অনেককেই জিজ্ঞাসা করায় মোটামুটি যে ধারণা পেলাম, ঐ বয়সের জন্য সেটা খানিকটা ভয়াবহ। শুনেছিলাম ঐ খানে নতুন একটা মা ও শিশু ক্লিনিক হয়েছে। মৃত বাচ্চাগুলোকে ওই ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়। এই ব্যাপারটা মাসে দুই-তিনবার দেখতাম। প্রথম দিকে যেমন উত্তেজনা হত, পরে সেটা মিইয়ে গিয়েছিল। এখনও কচুরীপানার ফুল আমি ভালোবাসি। কিন্তু তুলতে যেতে পারি না।
অনেক বড় হয়ে ওঠবার পর জেনেছিলাম, আসলে স্বাভাবিক ভাবে মৃত নবজাতকদের না, ওই ড্রেনটা ছিল এ্যাবর্শন করা শিশুদের ডাম্পিং ড্রেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন